বাংলাদেশ

অনুমোদন না থাকায় সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতাল সিলগালা

প্রতিনিধি সৈয়দপুর   নীলফামারী

১২ জুন ২০২৪


| ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারীর সৈয়দপুরে কামারপুকুর ধলাগাছ নামক এলাকায় অবস্থিত ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ল্যাবটি সিলগালা করে হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন না থাকায় বুধবার নীলফামারী সিভিল সার্জন দপ্তর অভিযান চালিয়ে সেটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন তিনজন রোগীকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায়  জেলায় ফাইলেরিয়া  রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এ রোগের চিকিৎসার জন্য গত ২০০২ সালে জাপান সরকারের অর্থায়নে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকায় যাত্রা শুরু করে ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি।  বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইম্যুনোলজি (আইএসিআইবি) হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে ছিল। হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রকল্প পরিচালক ডা. মোয়াজ্জেম  হোসেন ওই সময় স্থানীয়ভাবে ১৮ জন দেশি-বিদেশি চিকিৎসককে নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন। সেই সময় জাপান, কানাডা ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় দুইটি বহুতল ভবন নিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা হয়। জাপান ও অন্যান্য দেশ থেকেও গবেষণা কর্মীরা আসেন এখানে। তবে ২০১২ সালে হাসপাতালটিকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে নানা সংকট সৃষ্টি হয়। পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্বে  ভেঙে পড়ে  চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম।  আর এতে করে মুখ ফিরিয়ে নেয় দাতা সংস্থাগুলো। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে টোকেন মূল্যে চিকিৎসা দেয়ার প্রত্যয়ে সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ল্যাব নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করে হাসপাতালটি। বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান আইএসিআইবি এর সঙ্গে ভূয়া চুক্তিনামা দেখিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এরপর বিভিন্ন  জেলা থেকে নতুন করে ১০১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই সময় চাকুরি প্রত্যাশী প্রত্যেকের কাছে  ফেরতযোগ্য জামানতের কথা বলে নেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত। পরবর্তীতে নিয়োগপ্রাপ্তরা বেতন-ভাতা না পেয়ে নিরূপায় হয়ে চাকরি ছেড়ে  চলে যান। কিন্তু গত ২৬ মে প্রতিষ্ঠানটি পত্রিকায় আবারও ২৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় প্রতারণার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। গতকাল বুধবার নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকায় অবস্থিত ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ল্যাব এ অভিযান চালানো হয়।  নীলফামারী জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে ওই অভিযানকালে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন না থাকায়  হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। অভিযানকালে সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডা. আতিয়ার রহমান শেখ, উপজেলা স্বাস্থ্য  স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মো. আলতাফ হোসেন সরকার উপস্থিত ছিলেন।
ডা. আবু  হেনা  মোস্তফা কামাল জানান, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমরা জানতে পারি এই ফাইলেরিয়া হাসপাতাল এন্ড  জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ল্যাবের  কোন অনুমোদন নেই। এছাড়াও এ হাসপাতালে নিয়মিত  কোন চিকিৎসক, নার্স, টেকিনেশিয়ান কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী নেই।  আর চিকিৎসা সেবার জন্য যে সব সুযোগ সুবিধা থাকা দরকার সে গুলোর কিছুই নেই। তাই হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়েছে। 

14