বাংলাদেশ

অদম্য মেধাবীদের গল্প উচ্চ শিক্ষা অর্জনে দারিদ্র্যতায় বাধা

সাইফুল ইসলাম,কাউনিয়া   রংপুর

১০ জুন ২০২৪


| ছবি: প্রতিনিধিঃ

গরীব ঘরে জন্ম ওদের। সুখের দেখা জুটেনি ভাগ্যে। এক বেলা খাবার জুটলে আরেক বেলা খাবার চিন্তা তাদের তারা করে বেড়ায়। তবুও নানা প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে জীবন যুদ্ধে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন ওদের চোখে মুখে। ওরা । এদের কারো বাবা রাজমিস্ত্রী  ,কেউ দরিদ্র কৃষক, কারো বাবা দিন মজুর। তাদের সন্তানরা এসএসসি  পরীক্ষায় ভালো ফল করলেও উচ্চ শিক্ষা কিভাবে গ্রহন করবে, সে চিন্তা ওদের সারাক্ষণ  তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারবে কী না এ চিন্তায় শঙ্কিত তারা। সমাজের বিত্তবানদের একটু সহানুভুতি পেলে কাউনিয়ার ৫ অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা  অর্জনের স্বপ্ন পূরন হবে। অনক চন্দ্র বর্ম্মনঃ  দরিদ্র ঘরে জন্ম অনক চন্দ্র বর্ম্মনের । নতুন বই কিনে পড়ালেখা করতে পারেনি সে।  দরিদ্রতা আর নানা প্রতিকুলতার সাথে যুদ্ধ করে কাউনিয়া মোফাজ্জল হোসেন মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে  এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে  বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন   জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। উপজেলার হরিশ্বর  গ্রামের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী গোপাল চন্দ্র ও গৃহিনী আটোসী রানীর পুত্র সে।  বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কোন জমি- জমা  নেই তাদের। ২ বোন ১ভাই পিতা-মাতা নিয়ে ৫ জনের সংসার। রাজমিস্ত্রী বাবার সামান্য রোজকারের টাকায় কোন রকমে চলে সংসার। রীতা পড়ার খরচ জোগাতে নিজে প্রাইভেট পড়িয়েছে। আটোসী রানী বলেন ছেলের সাফল্যে অনেক খুশি হলেও  অনেক স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরুণে অর্থের যোগান হবে কি ভাবে ? তার স্বপ্ন পূরনে এখন বড় বাঁধা দারিদ্রতা। 

রবিউল ইসলাম :  কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর  উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে অংশ নিয়ে  জিপি এ-৫ পেয়েছে রবিউল ইসলাম  । উপজেলার বিনোদন মাঝি গ্রামের দরিদ্র দিন মজুর আব্দুল মজিদ ও গৃহিনী মোছাঃ রহিমা বেগমের পুত্র  সে। চরম অর্থ সংকটের মাঝেও এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে  জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।  দরিদ্রতার সাথে লড়াই করে এসএসসি পাস করলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহন নিয়ে এখন দুচিন্তায় পড়েছে রবিউল ইসলাম   । তার শিক্ষার খরচ জুটবে কিভাবে এচিন্তায় বিভোর তার দরিদ্র পিতা মাতা।  মাত্র ৬ শতাংশ জমিতে বাড়ি ভিটা তাদের। আর কোন জমিজিরাত নেই। দারিদ্র্যতা কে জয় করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সে। মা রহিমা বেগম ছেলের সাফল্যে খুশি হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। মেয়ে চায় ডাক্তার হতে, কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে কিভাবে তা সম্ভব। সংসারে একজন মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তির রোজকার টুকু হয় তা দিয়েই চলে  তাদের  সংসার। তিনি মেয়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন। রাকিবুল ইসলাম রানা: দারিদ্রতা ও অর্থ সংকট দমিয়ে রাখতে পারেনি কাউনিয়া উপজেলার হরিচরণ লস্কর  গ্রামের দরিদ্র বর্গাচাষী নুর মোহাম্মদ আলীর পুত্র রাকিবুল ইসলাম রানা কে। চরম অর্থ সংকটেও রানা এবার এসএসসি পরীক্ষায় টেপামধুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে অংশ নিয়ে  জিপিএ-৫ পেয়েছে। দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে এসএসসি পাস করলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহন নিয়ে এখন দুঃচিন্তায় পড়েছে রানা।  মা রওশানারা বেগম জানায় অন্যর জমি বর্গা নিয়ে চাষবাস করি।   ওরা ২ ভাই । অভাবের মাঝেও সব প্রতিবন্ধকতাকে পদদলিত করে ভালো কলেজে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে  বর্ষা । পিতা মাতা ছেলের  সাফল্যে খুশি হলেও ছেলের  ভবিষ্যৎ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন তারা। ছেলে  চায় ডাক্তার হতে, কিন্তু দরিদ্র পিতা- মাতার পক্ষে কিভাবে তা সম্ভব। তিনি  ছেলের জন্য সকলের কাছে আর্শিবাদ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন। 

শাহরিয়ার শান্ত: দরিদ্র ঘরে জন্ম শাহরিয়ার শান্ত'র। ভাল জামা কাপড়, নতুন বই খাতা এমন কি পেট ভরে ভাত জুটেনি রনির ভাগ্য। তবুও সে কঠোর পরিশ্রম করে টেপামধুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস এস সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে   গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে উপজেলার রাজীব  গ্রামের দরিদ্র কৃষক আশিকুর রহমান ও শরিফা খাতুনের পুত্র । ১৮ শতক জমির উপর বাড়ি ভিটা ছারা কোন জমিজিরাত নেই তাদের। তারা ১ ভাই ১ বোন পড়ালেখা করছে। শান্ত  চায় ডাক্তার হতে কিন্তু তার পিতার তো সে সামর্থ্য নেই। তাই বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্য কামনা করেছেন। শ্রাবন রায়: নানা প্রতিকুলতা কে হার মানিয়ে দারিদ্র্যতাকে  জয় করে টেপামধুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ -৫ পেয়েছে। ১৫ শতক বাড়ি ভিটা মাত্র। তালুকশাহবাজ গ্রামের বাসিন্দা  পিতা রমনী চন্দ্র বর্ম্মনের  রোজকাররে চলে তাদের সংসার। গৃহিণী মাতা  কাজলী রানী রায় বলেন ছেলে চায় ডাক্তার হতে কিন্তু অভাবের সংসারে তা কী করে সম্ভব। 

14