বাংলাদেশ

বীরগঞ্জে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল

নিজস্ব প্রতিবেদক   দিনাজপুর

২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪


| ছবি: 

ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে শীত বিদায়ের লগ্নে প্রকৃতি বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবুজ পাতার ফাঁকে এখন আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত  গ্রামঞ্চলের বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে এবং পৌরসভার চারপাশ জুড়েই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বালাইনাশক স্প্রের পাশাপাশি ব্যস্ত হয়ে উঠেছে গাছের পরিচর্যায় বাগান চাষিরা। শীতের ভরা মৌসুম। ফাল্গুন মাসের হিমেল হাওয়ায় সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খায় মুকুল। অথচ এর মধ্যেই বীরগঞ্জ উপজেলায় অনেক আম গাছে মুকুলের দেখা মিলছে। যে দিকে তাকাই দেখা যায় আমের মুকুলের আভা। গাছে গাছে দৃশ্যমান আমের মুকুল। মুকুলের ভারে নুয়ে পরার উপক্রম প্রতিটি গাছ। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বারোমাসি ও দেশি জাতের আম গাছে এই মুকুল দেখা দেয়। ফুলের সমারোহ মিলেছে প্রকৃতি সাজে। সারি বদ্ধ গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেন সভা ছড়াচ্ছে নিজেস্ব মহিমায়। বাতাশে মিশে গেছে মৌ মৌ গন্ধ যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনি বার্তা জানান দেয় আমের মুকুল। বনফুল থেকে মৌমাছি দল গুনগুন করে ভিরতে শুরু করে আম মুকুলে, সেই মুকুলে স্বপ্ন বাধে চাষিরা।

আমচাষি ও বাগান মালিকরা জানান, উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা জুড়ে শীতের তীব্রতা বিরাজ করলেও আগাম জাতের সব আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে।  ফাল্গুনের শুরুতেই মুকুল এসেছে, এ কারণে বাগানে পরিচর্যা বাড়িয়েছেন চাষিরা। 
বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ঘুরে দেখা যায় শুরুতেই পরিবর্তন শুরু হয়েছে প্রকৃতির। গাছের পুরনো পাতা ঝরে গজাচ্ছে নতুন পাতা। আর সেই পাতার ফাঁকে বেরিয়ে আসছে আম, লিচু, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের মুকুল। এই উপজেলায় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হাড়ি ভাঙ্গা,গৌরমতি, বারিফর,ন্যাংড়া,আম্রপলি, মলিস্নকা, ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, সিঁন্দুরী, আশ্বিনাসহ নানা প্রকার গুটি আম। ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অবধি বারোমাসি বা লোকাল জাতের আম গাছে মুকুল আসা দেখা গেছে। ফেব্রুয়ারি মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ও ঘন কুয়াশার কারণে গাছের মুকুল নষ্ট হতে পারে। প্রস্তুতি নিচ্ছে আম ভালোবাসি মানুষ ও আম চাষিরা। পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের জেলেখাপাড়া আম চাষি কালাম মাষ্টার আম বাগন চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসা করে আসছেন। এবছর তিনি ২০ একর জমিতে আম - লিচু'র পরিচর্যা করছেন। তিনি জানান,আমার বাগানগুলোতে প্রতিবছর পর্যাপ্ত পরিমাণ আম ধরে। এবারও গাছগুলোতে প্রচুর মুকুল এসেছে। তিনি আরও জানান,আশা করা যায় , বড় ধরনের কোন প্রকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে  আমের বাম্পার ফলন হবে। ঘন কুয়াশার কবলে না পড়লে, এসব মুকুলে ভালো আম হবে।” তবে নিয়ম মেনে মাঘের শেষ দিকে যেসব গাছে মুকুল আসে, তাতে আরও বেশি ফলন হয় বলে আশা করা যায়। তবে গতবছরের তুলনায় এবছর আমের মুকুল কম বলে মনে হচ্ছে। তারপরও আল্লাহ দিলে যদি ঝড়-বৃষ্টি না হয় তাহলে অনেক আম পাবো।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, বীরগঞ্জ উপজেলায় আম গাছগুলো মুকুল আসতে শুরু করেছে। চলতি আম মৌসুমে এবার উপজেলায় ৩ শত ১৭ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। বাগানের সংখ্যা ৪৯৫টি। এছাড়াও উপজেলার প্রায় বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে আমের গাছ রয়েছে। প্রায় গাছে আমের মুকুল এসেছে। আমরা আম বাগান চাষিসহ বসতবাড়িতে থাকা আম গাছ মালিকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। আম চাষিদের যাতে আমের ভাল ফলন হয় সেই জন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে তাদের বিভিন্ন ভাবে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০ জন আম চষিকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

24