বাংলাদেশ

কিশোরগঞ্জে জমি নিয়ে সংঘর্ষে জোড়া খুন মামলা আটক তিন 

প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ   নীলফামারী

০৮ জুন ২০২৪


| ছবি: সংগৃহীত

বর্গাচাষি (আদিয়ার) প্রান কৃষ্ণ (কৃষ্ট) রায়(৫০) ও মা সুফলা রানী (৭০) চাষের জমি রক্ষা করতে গিয়ে খুনের স্বীকার হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মুশা ৮নং গ্রামে। গত( ৬ই) জুন  বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে জমি নিয়ে সংঘর্ষ হলে মা সুফলা রানী ঐদিনে সন্ধ্যা ৭ টায় এবং ছেলে প্রান কৃষ্ণ রায় কৃষ্ট পরের দিন শুক্রবার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। জোড়া খুনের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজমান। জোড়া খুনের ঘটনায় কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উজ্জ্বল (৩০) পিতা - কেদার চন্দ্র, নিমালা (৪০) পিতা শ্রীমোল্লা, অনিতা (৩৪) স্বামী সুরঞ্জিত কাল্টু। 

মৃত্যু প্রান কৃষ্ণ (কৃষ্টের) মেয়ে কেয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাবা একজন দিনমজুর বর্গাচাষি ১৫-২০ বছর যাবত ঐ জমি হরিশ চন্দ্র মাষ্টারের নিকট থেকে বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন। ঐ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হরিশ চন্দ্র মাষ্টারের সাথে মামলাও চলছে। বিবাদীদের তারা রায় পেয়েছে এই কথা বলে ওই জমিতে ট্রাকটর নিয়ে এসেছে চাষ করার জন্য আমি ও আমার মা আমার বাবা একা প্রাণী মানুষ ওরা ১০-১৫ জন মানুষ সবার হাতে দা-কুরাল খুন্তা শাবল ও লাঠি ছিল এজন্য বাবা কে যাইতে বাধা করি। তারপরেও দীর্ঘদিন  ঐ জমি চাষ করার মায়ায় তাদেরকে বাধা প্রদান করিলে আমার বাবাকে তারা ঘেরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্রো দিয়ে কোপ মারতে থাকে। বাবার পেট থেকে ভুরি বের হয়ে যায় এবং মাথা ফেটে যায় এই করুন অবস্থায় আমার দাদীমা এগিয়ে গেলে তাকেও অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। ছোট ভাই শুভকে মারপিট করে  পানিতে চুবাতে থাকে। 

স্ত্রী সাবিত্রী রানী বলেন, প্রদীপ কুমারের বাহিনী যখন ১৫-২০ জন লাঠি সোটা দাও কুড়াল খুন্তি সহ ধারালো দেশিও অস্ত্র নিয়ে জমি দখলের সময় আমি আমার স্বামীকে বাধা করেছি। আমার স্বামী কিছু তাদের বলে নাই শুধু বলেছে তোমরা যদি জমি পান তাহলে ১০-১৫ দিন পর জমি চাষ করেন এই কথা কওয়া মাত্রই তারা লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। খুন্তি দিয়ে পেটের ভুরিতে কোপ দিয়ে আমার স্বামীর পেট থেকে ভুরি বের করে দিয়েছে। আমি কান্না করে আমার স্বামী আমার শাশুড়ির জন্য সবারে পাও ধরেছি। 
আমার স্বামী শাশুড়ির জীবন ভিক্ষা দাও তারপরেও তারা বেশি করে মারে আর চোটায় আমি প্রশাসন সহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই জোড়া খুনের বিচার চাই। 

মুশা ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিউদ্দিন বলেন আমার মনে হয় এই হিন্দু পাড়ায় প্রত্যেকটা বাড়িতে একটা করে ব্যারিস্টার আছে তা না হলে এরা কিভাবে সাহস পায় তিনি আরও বলেন বর্গা চাষি কৃষ্ট ও মা সুফলার খুনের  আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। 

প্রকৃত জমির মালিক হরিশচন্দ্র মাস্টারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই জমি আমার বাপ দাদারা আবাদ করি খাইছে ওরা মারা যাওয়ার পর আমি ৪০ বছর থেকে চাষাবাদ করেছি এখন হঠাৎ করি ২০০৮ সাল থেকে প্রদীপ কুমার ভুয়া দাবি তুলে আমাকে হয়রানি করার জন্য ওই জমির উপর মামলা করে। সে রায় পেয়েছে বলে তার লোকজন নিয়ে  ওই জমি দখল করতে এসেছে । আমি আপিল করেছি ঢাকার হাইকোর্টের রায় আমি  বিশ্বাস করি তারপরেও তারা জোড়া খুন করল এই খুনের বিচার চাই। 

কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি খুনের  সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন মৃত্যুের বড় ভাই সুভাষ চন্দ্র বাদী হয়ে থানায় ১৭ জনকে আসামি  করে  একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। অন্যান্য আসামীরা পলাতক আছে, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে । 

9