বাংলাদেশ

রংপুরে বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক   রংপুর

১২ জুন ২০২৪


| ছবি: প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশে বছরে চার হাজার শিশু ক্লাবফুট (বাঁকা পা) সমস্যা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। তবে এটি এখন আর কোনো সমস্যা নয়। অভিভাবকরা একটু সচেতন থাকলে সহজেই চিকিৎসার মাধ্যমে বাঁকা পায়ের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব পনসেটি পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। গত ষোল বছরে ওয়াক ফর লাইফ সফলতার সঙ্গে দেশে প্রায় ৩৬ হাজারের বেশি ক্লাবফুট শিশুকে চিকিৎসার আওতায় এনেছে। যাদের বেশির ভাগই চিকিৎসায় ক্লাবফুটমুক্ত হয়েছে। 
বুধবার (১২ জুন) দুপুরে রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অতিথিরা। দাতা সংস্থা মিরাকেল ফিট ও অ্যাকশন অন পোভার্টির সহায়তায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্যানক্রিড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন পরিচালিত প্রকল্প ওয়াক ফর লাইফ। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল-‌‌ ‌‘ক্লাবফুট চিকিৎসায় সুফল লাভের জন্য জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা উত্তম’। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড ট্রমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. শরীফুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড ট্রমাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এজেএম শাহারিয়ার আরিফ। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন, অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড ট্রমাটোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আল বারোনি রেজা, ওয়াক ফর লাইফের ফিজিওথেরাপিস্ট ও প্রকল্প প্রতিনিধি ডা. মো. নজরুল ইসলাম নাঈম, ওয়াক ফর লাইফের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান রনি।

বক্তারা বলেন, দেশে শিশুদের প্রতিবন্ধিতা দূরীকরণে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্পের মাধ্যমে যৌথভাবে কাজ করছে। ওয়াক ফর লাইফ প্রকল্পটির মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত পনেরো বছরে দেশে ৩৫ হাজারের বেশি শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ শিশুই চিকিৎসার মাধ্যমে সাফল্য পেয়েছে। ফিজিওথেরাপিস্ট নজরুল ইসলাম নাঈম জানান, রংপুরে সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বুধবার হতদরিদ্র ক্লাবফুট রোগীদের বিনামূল্যে এ চিকিৎসা দেওয়া হয়। রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ওয়াক ফর লাইফ ক্লাবফুট পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে সেবামূলক এ কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়েছে। ক্লাবফুট (মুগুর পা) বিশিষ্ট শিশুদের হতদরিদ্র পরিবারকে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ সেবা কার্যক্রম চালু হয়। এরপর স্থান পরিবর্তন করে ২০১৫ সাল থেকে প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এটি পরিচালনা করা হচ্ছে। যেকোনো প্রয়োজনে ক্লাবফুট শিশুদের অভিভাবকরা প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের অফিস কক্ষে যোগাযোগ করতে পারবেন। আলোচনা শেষে দিবস উদযাপনে শিশুদের ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে সচেতনতামূলক একটি শোভাযাত্রা বের হয় হাসপাতাল চত্বর প্রদক্ষিণ করে। এতে অতিথি, চিকিৎসক, নার্সরাও অংশ নেন। এ দিন ক্লাবফুট আক্রান্ত দুই শিশুকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরে তাদের অভিভাবকরা অনুভূতি প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, ক্লাবফুট এক ধরনের জন্মগত ত্রুটি। জন্মগত ত্রুটি শিশুর শরীরের এক ধরনের সমস্যা যা শিশুর জন্মের সময় থেকেই দেখা যায়। এই ত্রুটি শিশুর এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন ও কার্যকলাপে সাময়িক কিংবা স্থায়ীভাবে প্রভাব ফেলে। তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের ওয়াক ফর লাইফ প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

18